রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

৩২ দিনেই এক কোটি সংক্রমিত

৩২ দিনেই এক কোটি সংক্রমিত

স্বদেশ ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ কোটি ছাড়িয়ে গেছে সোমবার। উত্তর গোলার্ধে শীতকাল আসন্ন। ফলে সেখানে এই ভাইরাস দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার এক বড় ঝুঁকি রয়েছে। আলাদা আলাদাভাবে দেয়া বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাবের ওপর ভিত্তি করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স একথা    বলেছে। এতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা অবশ্যই অনেক বেশি। কারণ, পরীক্ষা পদ্ধতিতে ঘাপলা আছে। অনেক দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। রয়টার্সের ডাটা বলছে, বহু দেশে নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মাত্র ৩২ দিনে বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি মানুষ। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি। আর এই ৩২ দিন পরে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি। এর আগে দুই কোটি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি হতে সময় লেগেছিল ৩৮ দিন। তারও আগে এক কোটি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটিতে যেতে সময় লেগেছিল ৪৪ দিন। অন্যদিকে, চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তাতে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি হতে সময় লেগেছিল তিন মাস। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, দিন যতই যাচ্ছে সংক্রমণের হার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এযাবৎকালে একদিনে রেকর্ড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল গত সপ্তাহের শেষে। এ সময় প্রথমবারের মতো একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে ৪ লাখের বেশি। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪৭ হাজার মানুষ। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এই হার ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার। বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিল। সারা বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার শতকরা প্রায় ৪৭.২৭ ভাগ বা প্রায় অর্ধেকই উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৭ জন। ভারত ও ব্রাজিলের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫ এবং ২৪৮।

ইউরোপে প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে দেড় লাখের উপরে। ইতালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, ইউক্রেন, সাইপ্রাস এবং চেক প্রজাতন্ত্রে প্রতিদিনই রেকর্ড সংক্রমণ ঘটছে। সারা বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তার মধ্যে শতকরা ১৭ ভাগের বেশি ইউরোপেই। বিশ্বের মোট মৃত্যুর শতকরা প্রায় ২২ ভাগ ইউরোপে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যখন দ্বিতীয় দফার করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার চেষ্টা করছেন, তখন বৃটেনের বিভিন্ন অংশে লকডাউন দেয়া হয়েছে। ফ্রান্সে আরোপ করা হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ। ইউরোপের অন্যদেশে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জরুরি নয় এমন অপারেশন। মেডিকেল শিক্ষার্থীদেরকে সার্ভিসে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে বড় অর্থনৈতিক প্রণোদনা আহ্বান করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে বেশকিছু রাজ্যে করোনা রেকর্ড পর্যায়ের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রেকর্ড পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতে সব মিলিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শনিবার দাঁড়িয়েছে ৭৪ লাখ ৩০ হাজার। বড় আকারে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যে। মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর শনিবার তৃতীয় সপ্তাহের জন্য রাজধানী তেহরানে লকডাউন রয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু থেকে মারা গেছেন কমপক্ষে ১১ লাখ মানুষ। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মৃতের এই সংখ্যা সফল একটি টিকা আসার আগে ২০ লাখে দাঁড়াতে পারে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877